বিকাশ এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন ও লাভের গোপন রহস্য | শুরু করুন আজই

                 

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন।বিকাশ এজেন্ট এর ব্যবসা শুরু করা যায় এবং কত টাকা খরচ হয় এ সকল বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব।

বিকাশ-এজেন্ট-ব্যবসা-লাভ-কমিশন-এবং-রেজিস্ট্রেশনবর্তমানে বিকাশ এজেন্টের ব্যবসায় প্রচুর লাভ হচ্ছে এবং এই ব্যবসা সহজে শুরু করা যায়, তাই বিভিন্ন বয়সের মানুষ কম টাকায় সহজ ব্যবসা হিসেবে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসার কথা চিন্তা করেন।আপনি চাইলে খুব সহজেই এবং অল্প পুঁজিতে এই ব্যবসাটি শুরু করতে পারেন।

পেজ সূচিপত্রঃ বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো। বর্তমান সময় শহর অথবা গ্রামে প্রত্যেকটা জায়গাতে বিকাশের ব্যাংকিং সেবা চালু হয়েছে। কারণ বিকাশের মাধ্যমে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় টাকা লেনদেন করা খুবই সহজ। বিকাশ ব্যাঙ্কিং সেবাকে চেনে না এরকম লোক হয়তো পাওয়া যাবে না। 


তাই আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট হিসেবে কাজ করতে চান তাহলে সহজেই লাভবান হবেন। এজন্য আপনাকে কিছু নিয়মকানুন মানতে হবে। এর পাশাপাশি আপনাকে কিছু টাকার জোগাড় করতে হবে।তারপর আপনি বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা শুরু করতে পারেন। এই ব্যবসার ফলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি সফল হতে পারবেন।

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় লাভ কেমন

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় সাধারণত লাভ নির্ভর করে লেনদেনের উপরে। আপনার লেনদেন যত বেশি হবে লাভের পরিমাণ তত বৃদ্ধি পাবে। যে এজেন্টের লেনদেনের পরিমাণ বেশি হয় তার লাভের পরিমাণও বেশি হয়। আপনি যদি ভালো লোকেশনের দোকান দিতে পারেন তাহলে ক্যাশ ইন এবং ক্যাশ আউটের কমিশনের ফলে আপনি ভালো টাকা আয় করতে পারবেন। তাই আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে জানেন তাহলে আপনার ব্যবসায় সফল হওয়ার সম্ভাবনা সব থেকে বেশি।

বিকাশ এজেন্ট কমিশন রেট

বিকাশ এজেন্ট কমিশন রেট বিকাশ অ্যাপস বা নর্মালি  ক্যাশ আউট এর উপরে কিছুটা কম বেশি হয়ে থাকে। আপনি যদি বিকাশ অ্যাপস ব্যবহার করেন তাহলে আপনি প্রতি এক হাজার টাকায় ৪ টাকা ৩০ পয়সা কমিশন পাবেন। আবার অ্যাপ দিয়ে যদি আপনি ক্যাশ ইন করে থাকেন সেক্ষেত্রে বাড়তি কমিশন যুক্ত হবে। বিকাশ ক্যাশ আউটের ক্ষেত্রে কোন কমিশন পাবেন না।

আপনি যদি ৯০% এর উপরে লেনদেন বিকাশ এপস এর মাধ্যমে করেন তাহলে আপনি বাড়তি ০.২০টাকা প্রতি হাজারে স্পেশাল কমিশন পাবেন। অর্থাৎ সেখানে মোট আপনি কমিশন পাচ্ছেন ৪ টাকা ৫০ পয়সা। আবার আপনি যদি আরো বিকাশের প্রিয় এজেন্ট নাম্বার হিসেবে আপনার নাম্বারটি সেট করতে পারেন সে ক্ষেত্রে ১.৪৯ পারসেন্ট কমিশন পাবেন।

বিকাশ এজেন্ট ক্যাশ আউট কমিশন

বিকাশ এজেন্ট ক্যাশ আউট কমিশন সম্পর্কে যারা বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা শুরু করতে চাচ্ছেন তাদের অবশ্যই জানা উচিত। ক্যাশ আউট হলো গ্রাহকের একাউন্ট থেকে টাকা উত্তোলন করা।যখন একজন গ্রাহক তার একাউন্ট থেকে বিকাশ এজেন্ট এর মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করেন তখন তাকে নির্দিষ্ট হারে চার্জ প্রদান করতে হয় এবং সেই চার্জ থেকে বিকাশ এজেন্ট কিছু পরিমাণে কমিশন পান।

সাধারণত গ্রাহকের কাছ থেকে ক্যাশ আউট বাবদ ১.৫% হারে ক্যাশ আউট চার্জ নেওয়া হয়। এই টাকার মধ্যে কিছু অংশ বিকাশ কোম্পানি চার্জ হিসেবে রেখে দেন এবং বাকি অংশ বিকাশ এজেন্টকে দিয়ে দেওয়া হয়। একজন বিকাশ এজেন্ট ডিস্ট্রিবিউটর চুক্তির উপর নির্ভর করে মোট ক্যাশ আউট চার্জার ৭০% থেকে ৮০% পর্যন্ত পেয়ে থাকেন। এ সকল কমিশন এজেন্টের বিকাশ একাউন্টে জমা হয়ে থাকে। কমিশন গুলো সাধারণত মাস শেষে অথবা নির্দিষ্ট সময় পর পর বিকাশ সিস্টেমের মাধ্যমে দেওয়া হয়।

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট পাওয়ার শর্ত

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা শুরু করার জন্য আপনাকে প্রথমে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে। সেজন্য অবশ্যই আপনাকে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট পাওয়ার জন্য আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। বিকাশ কোম্পানির এই নির্দিষ্ট শর্তাবলী পূরণ করতে পারলে আপনি বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন এবং ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। চলুন বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট হওয়ার শর্তগুলো জেনে নেই-
  • একাউন্ট আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছর এর বেশি হতে হবে।
  • বৈধ জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
  • ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।
  • দোকান বা ব্যবসার জন্য একটি নির্দিষ্ট ঠিকানা থাকতে হবে।
  • বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট পাওয়ার জন্য অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট মোবাইল নাম্বার লাগবে।
  • দোকানে বিকাশের নির্দিষ্ট সাইনবোর্ড বা কাস্টমার সেবার সাইনবোর্ড লাগিয়ে রাখতে হবে।
  • আপনাকে প্রতিদিন সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা লেনদেন করতে হবে।
  • সবসময় বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ৭ হাজার টাকার বেশি থাকতে হবে।
  • বিকাশ এজেন্ট নাম্বার থেকে আপনি ১০ বার ক্যাশ ইন এবং ১০ বার ক্যাশ আউট করতে পারবেন।
  • একদিনে ৫০ হাজার টাকার বেশি ক্যাশ ইন করতে পারবেন না।

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানুন। কারণ আপনি বিকাশ এজেন্ট হয়ে খুব সহজেই আয় করতে পারবেন। বিকাশ এজেন্ট হওয়ার প্রক্রিয়া সহজ এবং লাভজনক, তবে সতর্কতা ও সঠিক নিয়ম মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এখন আপনাদের জানাবো কিভাবে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হয়। নিচে বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট খোলার নিয়ম এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত দেওয়া হল।
  • আপনি আপনার এলাকায় থাকার বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে গিয়ে ফরম পূরণ করতে পারেন।
  • তারপর আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন জাতীয় পরিচয় পত্র, ট্রেড লাইসেন্স, পাসপোর্ট সাইজের ছবি দুই কপি, ঠিকানা প্রমাণ যেমন বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি জমা দিতে হবে।
  • যে সিমে এখন পর্যন্ত বিকাশ খোলা হয়নি এবং যে সিম দিয়ে আপনি এজেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে চান সেই সিম এবং নম্বরটি লাগবে।
  • আপনার স্থায়ী ঠিকানা দিতে হবে।
  • এমন একটি মোবাইল নাম্বার দিতে হবে যেটা সব সময় খোলা থাকবে।
  • আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম এবং ট্রেড লাইসেন্স দিতে হবে।

বিকাশ এজেন্ট হওয়ার শর্ত

বিকাশ এজেন্ট হওয়ার অনেকগুলো শর্ত রয়েছে। যেগুলো আপনাকে মেনে চলতে হবে। শর্তগুলো জেনে তারপরে অবশ্যই বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট করুন। কারণ সবগুলো শর্ত যদি আপনি মেনে চলতে না পারেন তাহলে আপনার ব্যবসার মোনাফা ভালো হবে না। তাই বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্টের শর্তগুলো সম্পর্কে জেনে নিন।
  • বিকাশ এজেন্ট হতে প্রতি মাসের অন্যতম পাঁচটি পার্সোনাল বিকাশ একাউন্ট খুলে দিতে হবে।
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্টে অবশ্যই ১ লক্ষ টাকা রিচার্জ করতে হবে।
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্টে সর্বনিম্ন ৭ হাজার টাকা ব্যালেন্স থাকতে হবে।
  • প্রতিবার লেনদেনের সময় ব্যালেন্স চেক করতে হবে।
  • কোন নাম্বারে টাকা সেন্ড মানি করার সময় অবশ্যই সেই মোবাইল নাম্বার এবং ব্যালেন্স চেক করতে হবে।
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর পিন নাম্বার সব সময় গোপন রাখতে হবে।
  • এছাড়াও বিকাশ এজেন্ট ব্যবসার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যেন কোন অসাধু লোকের খপ্পরে পড়তে না হয়।
  • যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি এড়ানোর জন্য বিকাশের সার্ভিস পয়েন্টে যোগাযোগ করতে পারেন।

বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

বর্তমান সময়ে বিকাশ এজেন্ট হওয়া একটি লাভজনক ব্যবসা। তবে বিকাশ এজেন্ট হতে আপনাকে প্রথমে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে হবে। এই বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য আপনার কিছু ডকুমেন্ট বা কাগজপত্রের প্রয়োজন পড়বে। সঠিক তথ্য এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করলে আপনি খুব সহজেই বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি কাগজপত্র প্রয়োজন হয় তা নিচে দেয়া হল-
  • আবেদনকারীকে অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের সামনের এবং পিছনের ফটোকপি দিতে হবে।
  • অবশ্যই দোকান থাকতে হবে এবং সেই দোকানের ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট করার সময় এই ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি দুই কপি জমা দিতে হবে।
  • স্থায়ী ঠিকানা সঠিক তথ্য দিতে হবে। ঠিকানা প্রমাণের জন্য বিদ্যুৎ বিলের কাগজ প্রদান করতে পারেন।
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর জন্য একটি নিবন্ধিত মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন হবে। যেখানে এর পূর্বে কোন বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়নি।
  • বিকাশ অফিসের চাহিদা অনুযায়ী এর বাইরেও অন্য কোন কাগজপত্রের প্রয়োজন হতে পারে।

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় সফল হওয়ার টিপস

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় সফল হতে চাইলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। প্রথমত, দোকানের লোকেশন হতে হবে জনবহুল ও নিরাপদ জায়গায়, যেখানে মানুষের চলাচল বেশি। এতে সহজেই বেশি লেনদেন হবে এবং গ্রাহক সংখ্যা বাড়বে। দ্বিতীয়ত, সর্বদা পর্যাপ্ত ক্যাশ বা ফ্লোট মানি রাখতে হবে, যেন যেকোনো সময় গ্রাহক ক্যাশ ইন অথবা ক্যাশ আউট করতে পারেন। ফ্লোটের অভাবে গ্রাহক চলে গেলে ব্যবসায় খারাপ প্রভাব পড়ে।

তৃতীয়ত, গ্রাহকদের সাথে ভালো ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিনয়ী এবং আন্তরিক ব্যবহার আপনাকে স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় করে তুলবে এবং মানুষ আপনার দোকানকেই অগ্রাধিকার দেবে।চতুর্থত, বিকাশের সকল নিয়মনীতি ভালোভাবে জানতে হবে এবং নিয়মিত আপডেট ফলো করতে হবে, যাতে কোনো ধরনের লেনদেনে ভুল না হয়। গ্রাহকের সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে পারলে আস্থা তৈরি হয়। 

পঞ্চমত, দোকানের নিরাপত্তার দিকে নজর দিতে হবে। ক্যামেরা, নিরাপদ ক্যাশ বাক্স ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের এবং গ্রাহকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও, দোকানে বিকাশের সাইনবোর্ড, পোস্টার বা ব্র্যান্ডিং উপকরণ ব্যবহার করা উচিত, যাতে দূর থেকে গ্রাহক সহজেই দোকান চিনতে পারে।সবশেষে, ইচ্ছাশক্তি ও নিয়মিত মনোযোগ ছাড়া কোনো ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব নয়। প্রতিদিন সেবা উন্নত করুনসএবং গ্রাহকের সন্তুষ্টিকে সবচেয়ে বড় লক্ষ্য মনে করুন। তাহলেই বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় আপনি দ্রুত সফলতার মুখ দেখবেন।

বিকাশ এজেন্ট হিসেবে ব্যবসা করার চ্যালেঞ্জ ও সমাধান

বিকাশ এজেন্ট হিসেবে ব্যবসা শুরু করা সহজ হলেও টিকে থাকা এবং সফল হতে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। প্রথমত, অনেক এলাকায় এজেন্টের সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রতিযোগিতা অনেক বেড়ে গেছে। এই চ্যালেঞ্জের সমাধান হলো, গ্রাহকদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল থাকা এবং দ্রুত ও নির্ভুল সেবা প্রদান করা। 

দ্বিতীয়ত, ফ্লোট মানি বা ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিদিনের ট্রানজেকশনের জন্য পর্যাপ্ত ফ্লোট মজুদ রাখতে হবে এবং বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর বা ব্যাংকের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে যাতে দ্রুত টাকা লেনদেন সম্ভব হয়। তৃতীয়ত, নিরাপত্তা ঝুঁকি (যেমন চুরি, ডাকাতি) অনেক এজেন্টের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এর সমাধানে দোকানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, নিরাপদ ক্যাশ বাক্স ব্যবহার এবং প্রয়োজনে লোকাল থানার সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। 

চতুর্থত, কখনো কখনো ভুল ট্রানজেকশন বা প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা গ্রাহক হারানোর কারণ হতে পারে। এজন্য বিকাশের নিয়মনীতি ভালোভাবে জানতে হবে এবং যেকোনো সমস্যা হলে দ্রুত হেল্পলাইন বা ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ধৈর্য এবং পেশাদার মনোভাব বজায় রাখা। চ্যালেঞ্জ আসবে, কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা, দক্ষতা, এবং মানসম্মত গ্রাহক সেবার মাধ্যমে সহজেই এগুলো মোকাবেলা করে একজন সফল বিকাশ এজেন্ট হওয়া সম্ভব।

বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত

বিকাশ এজেন্ট হিসেবে কাজ করলে লেনদেনের উপর নির্দিষ্ট কমিশন পাওয়া যায়, যা বিকাশ এজেন্টদের মূল আয়ের উৎস। সাধারণত বিকাশ ক্যাশ আউট লেনদেনের ক্ষেত্রে এজেন্টরা কমিশন পেয়ে থাকে। বর্তমানে প্রতি হাজার টাকা ক্যাশ আউটের জন্য বিকাশ এজেন্ট প্রায় ১৪.৭০ টাকা কমিশন পান। এর মধ্যে গ্রাহকের কাছ থেকে নির্ধারিত চার্জ কেটে নেওয়া হয় এবং তার একটি নির্দিষ্ট অংশ এজেন্টের কমিশন হিসেবে জমা হয়। 

এছাড়া ক্যাশ ইন বা অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত গ্রাহকদের কাছ থেকে আলাদা কোনো চার্জ নেওয়া হয় না, তবে কিছু বিশেষ ক্যাম্পেইন বা কর্পোরেট ক্যাশ ইন ট্রানজেকশনের জন্য বিকাশ এজেন্ট কমিশন পেতে পারে। কমিশনের হার সময় সময় পরিবর্তন হতে পারে এবং বিশেষ কিছু অফার বা প্রচারণার সময় বিকাশ কর্তৃপক্ষ এজেন্টদের জন্য অতিরিক্ত কমিশনের সুযোগ দেয়।

তাই বিকাশের অফিশিয়াল নোটিশ এবং আপডেট নিয়মিত ফলো করা উচিত। সঠিকভাবে লেনদেন পরিচালনা করে এবং বেশি গ্রাহক সেবা দিয়ে প্রতিদিন ভালো পরিমাণ কমিশন আয় করা সম্ভব। বিকাশ এজেন্টের আয় মূলত তাদের দৈনিক লেনদেনের পরিমাণের উপর নির্ভর করে, তাই ভালো লোকেশনে ব্যবসা স্থাপন এবং মানসম্মত সেবা দেওয়া আয় বাড়ানোর অন্যতম চাবিকাঠি।

বিকাশ এজেন্ট লিমিট

বিকাশ এজেন্ট হিসেবে ব্যবসা পরিচালনায় প্রতিদিনের লেনদেনের জন্য কিছু নির্দিষ্ট সীমা বা লিমিট নির্ধারণ করা আছে, যা বিকাশের নীতিমালার আওতায় পড়ে। সাধারণত একটি বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের দৈনিক ক্যাশ ইন এবং ক্যাশ আউট লেনদেনের একটি সর্বোচ্চ সীমা থাকে। বর্তমানে বিকাশ এজেন্টরা দৈনিক প্রায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশ আউট এবং ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশ ইন করতে পারে, তবে এই সীমা এলাকাভেদে এবং চাহিদার ভিত্তিতে ভিন্ন হতে পারে।

এছাড়া প্রতি মাসে এজেন্টদের মোট ক্যাশ ইন এবং ক্যাশ আউট লিমিটও নির্ধারিত থাকে।যদি কোনো এজেন্ট তার নির্ধারিত দৈনিক বা মাসিক লিমিট অতিক্রম করে, তবে বিকাশ কর্তৃপক্ষ সিস্টেমের মাধ্যমে লেনদেন ব্লক করতে পারে অথবা অতিরিক্ত লেনদেনের জন্য অনুমোদন নিতে হতে পারে। এজন্য ব্যবসার প্রাথমিক পর্যায়ে ফ্লোট প্ল্যান এবং দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বুঝে কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

প্রয়োজনে এজেন্টরা বিকাশের ডিস্ট্রিবিউটরের সাথে যোগাযোগ করে তাদের একাউন্টের লিমিট বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে পারে। ভালভাবে ব্যবসা পরিচালনা এবং গ্রাহক চাহিদা মেটাতে বিকাশ এজেন্টদের উচিত তাদের দৈনিক এবং মাসিক লেনদেনের হিসাব রাখা এবং যথাসময়ে ফ্লোট রিফিল করা। সঠিক লিমিট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসার ধারাবাহিকতা এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা রাখে।

লেখকের মন্তব্যঃ বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন

বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। আপনার ইচ্ছাশক্তি, নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলা এবং ভাল ব্যবহার হতে পারে আপনার ব্যবসার মূলধন। তাহলে আর দেরি কেন আজই শুরু করুন বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা, আর লাভবান হন। আরো নতুন নতুন তথ্য পেতে ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

বঙ্গ টিপস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url