বিকাশ এজেন্ট রেজিস্ট্রেশন ও লাভের গোপন রহস্য | শুরু করুন আজই
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন সম্পর্কে অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকেন।বিকাশ এজেন্ট এর ব্যবসা শুরু করা যায় এবং কত টাকা খরচ হয় এ সকল বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করব।

পেজ সূচিপত্রঃ বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন
- বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন
-
বিকাশ এজেন্ট ক্যাশ আউট কমিশন
-
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট পাওয়ার শর্ত
-
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
-
বিকাশ এজেন্ট হওয়ার শর্ত
- বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
- বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় সফল হওয়ার টিপস
- বিকাশ এজেন্ট হিসেবে ব্যবসা করার চ্যালেঞ্জ ও সমাধান
-
বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত
-
বিকাশ এজেন্ট লিমিট
- লেখকের মন্তব্যঃ বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা লাভ কমিশন এবং রেজিস্ট্রেশন
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় লাভ কেমন
বিকাশ এজেন্ট কমিশন রেট
বিকাশ এজেন্ট ক্যাশ আউট কমিশন
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট পাওয়ার শর্ত
-
একাউন্ট আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮ বছর এর বেশি হতে হবে।
-
বৈধ জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।
- ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।
-
দোকান বা ব্যবসার জন্য একটি নির্দিষ্ট ঠিকানা থাকতে হবে।
-
বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্ট পাওয়ার জন্য অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট মোবাইল নাম্বার
লাগবে।
-
দোকানে বিকাশের নির্দিষ্ট সাইনবোর্ড বা কাস্টমার সেবার সাইনবোর্ড লাগিয়ে
রাখতে হবে।
-
আপনাকে প্রতিদিন সর্বনিম্ন ২০০০ টাকা লেনদেন করতে হবে।
-
সবসময় বিকাশ অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স ৭ হাজার টাকার বেশি থাকতে হবে।
-
বিকাশ এজেন্ট নাম্বার থেকে আপনি ১০ বার ক্যাশ ইন এবং ১০ বার ক্যাশ আউট করতে
পারবেন।
-
একদিনে ৫০ হাজার টাকার বেশি ক্যাশ ইন করতে পারবেন না।
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
-
আপনি আপনার এলাকায় থাকার বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর অফিসে গিয়ে ফরম পূরণ করতে
পারেন।
-
তারপর আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন জাতীয় পরিচয় পত্র, ট্রেড
লাইসেন্স, পাসপোর্ট সাইজের ছবি দুই কপি, ঠিকানা প্রমাণ যেমন
বিদ্যুৎ বিল ইত্যাদি জমা দিতে হবে।
-
যে সিমে এখন পর্যন্ত বিকাশ খোলা হয়নি এবং যে সিম দিয়ে আপনি এজেন্ট
অ্যাকাউন্ট খুলতে চান সেই সিম এবং নম্বরটি লাগবে।
- আপনার স্থায়ী ঠিকানা দিতে হবে।
-
এমন একটি মোবাইল নাম্বার দিতে হবে যেটা সব সময় খোলা থাকবে।
-
আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম এবং ট্রেড লাইসেন্স দিতে হবে।
বিকাশ এজেন্ট হওয়ার শর্ত
-
বিকাশ এজেন্ট হতে প্রতি মাসের অন্যতম পাঁচটি পার্সোনাল বিকাশ একাউন্ট খুলে
দিতে হবে।
-
বিকাশ এজেন্ট একাউন্টে অবশ্যই ১ লক্ষ টাকা রিচার্জ করতে হবে।
- বিকাশ এজেন্ট একাউন্টে সর্বনিম্ন ৭ হাজার টাকা ব্যালেন্স থাকতে হবে।
-
প্রতিবার লেনদেনের সময় ব্যালেন্স চেক করতে হবে।
-
কোন নাম্বারে টাকা সেন্ড মানি করার সময় অবশ্যই সেই মোবাইল
নাম্বার এবং ব্যালেন্স চেক করতে হবে।
-
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর পিন নাম্বার সব সময় গোপন রাখতে হবে।
-
এছাড়াও বিকাশ এজেন্ট ব্যবসার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে
হবে। যেন কোন অসাধু লোকের খপ্পরে পড়তে না হয়।
- যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঝুঁকি এড়ানোর জন্য বিকাশের সার্ভিস পয়েন্টে যোগাযোগ করতে পারেন।
বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
-
আবেদনকারীকে অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্রের সামনের এবং পিছনের ফটোকপি দিতে
হবে।
-
অবশ্যই দোকান থাকতে হবে এবং সেই দোকানের ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। বিকাশ
এজেন্ট একাউন্ট করার সময় এই ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি জমা দিতে হবে।
-
পাসপোর্ট সাইজের ছবি দুই কপি জমা দিতে হবে।
-
স্থায়ী ঠিকানা সঠিক তথ্য দিতে হবে। ঠিকানা প্রমাণের জন্য বিদ্যুৎ
বিলের কাগজ প্রদান করতে পারেন।
-
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর জন্য একটি নিবন্ধিত মোবাইল নাম্বার প্রয়োজন হবে।
যেখানে এর পূর্বে কোন বিকাশ একাউন্ট খোলা হয়নি।
-
বিকাশ অফিসের চাহিদা অনুযায়ী এর বাইরেও অন্য কোন কাগজপত্রের প্রয়োজন হতে
পারে।
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় সফল হওয়ার টিপস
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় সফল হতে চাইলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা জরুরি। প্রথমত, দোকানের লোকেশন হতে হবে জনবহুল ও নিরাপদ জায়গায়, যেখানে মানুষের চলাচল বেশি। এতে সহজেই বেশি লেনদেন হবে এবং গ্রাহক সংখ্যা বাড়বে। দ্বিতীয়ত, সর্বদা পর্যাপ্ত ক্যাশ বা ফ্লোট মানি রাখতে হবে, যেন যেকোনো সময় গ্রাহক ক্যাশ ইন অথবা ক্যাশ আউট করতে পারেন। ফ্লোটের অভাবে গ্রাহক চলে গেলে ব্যবসায় খারাপ প্রভাব পড়ে।
তৃতীয়ত, গ্রাহকদের সাথে ভালো ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিনয়ী এবং আন্তরিক ব্যবহার আপনাকে স্থানীয়ভাবে জনপ্রিয় করে তুলবে এবং মানুষ আপনার দোকানকেই অগ্রাধিকার দেবে।চতুর্থত, বিকাশের সকল নিয়মনীতি ভালোভাবে জানতে হবে এবং নিয়মিত আপডেট ফলো করতে হবে, যাতে কোনো ধরনের লেনদেনে ভুল না হয়। গ্রাহকের সমস্যার দ্রুত সমাধান করতে পারলে আস্থা তৈরি হয়।
পঞ্চমত, দোকানের নিরাপত্তার দিকে নজর দিতে হবে। ক্যামেরা, নিরাপদ ক্যাশ বাক্স ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে নিজের এবং গ্রাহকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও, দোকানে বিকাশের সাইনবোর্ড, পোস্টার বা ব্র্যান্ডিং উপকরণ ব্যবহার করা উচিত, যাতে দূর থেকে গ্রাহক সহজেই দোকান চিনতে পারে।সবশেষে, ইচ্ছাশক্তি ও নিয়মিত মনোযোগ ছাড়া কোনো ব্যবসায় সফল হওয়া সম্ভব নয়। প্রতিদিন সেবা উন্নত করুনসএবং গ্রাহকের সন্তুষ্টিকে সবচেয়ে বড় লক্ষ্য মনে করুন। তাহলেই বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায় আপনি দ্রুত সফলতার মুখ দেখবেন।
বিকাশ এজেন্ট হিসেবে ব্যবসা করার চ্যালেঞ্জ ও সমাধান
বিকাশ এজেন্ট হিসেবে ব্যবসা শুরু করা সহজ হলেও টিকে থাকা এবং সফল হতে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। প্রথমত, অনেক এলাকায় এজেন্টের সংখ্যা বেশি হওয়ায় প্রতিযোগিতা অনেক বেড়ে গেছে। এই চ্যালেঞ্জের সমাধান হলো, গ্রাহকদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল থাকা এবং দ্রুত ও নির্ভুল সেবা প্রদান করা।
দ্বিতীয়ত, ফ্লোট মানি বা ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিদিনের ট্রানজেকশনের জন্য পর্যাপ্ত ফ্লোট মজুদ রাখতে হবে এবং বিকাশ ডিস্ট্রিবিউটর বা ব্যাংকের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে যাতে দ্রুত টাকা লেনদেন সম্ভব হয়। তৃতীয়ত, নিরাপত্তা ঝুঁকি (যেমন চুরি, ডাকাতি) অনেক এজেন্টের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এর সমাধানে দোকানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, নিরাপদ ক্যাশ বাক্স ব্যবহার এবং প্রয়োজনে লোকাল থানার সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে।
চতুর্থত, কখনো কখনো ভুল ট্রানজেকশন বা প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা গ্রাহক হারানোর কারণ হতে পারে। এজন্য বিকাশের নিয়মনীতি ভালোভাবে জানতে হবে এবং যেকোনো সমস্যা হলে দ্রুত হেল্পলাইন বা ডিস্ট্রিবিউটরের মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, ধৈর্য এবং পেশাদার মনোভাব বজায় রাখা। চ্যালেঞ্জ আসবে, কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা, দক্ষতা, এবং মানসম্মত গ্রাহক সেবার মাধ্যমে সহজেই এগুলো মোকাবেলা করে একজন সফল বিকাশ এজেন্ট হওয়া সম্ভব।
বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত
বিকাশ এজেন্ট হিসেবে কাজ করলে লেনদেনের উপর নির্দিষ্ট কমিশন পাওয়া যায়, যা বিকাশ এজেন্টদের মূল আয়ের উৎস। সাধারণত বিকাশ ক্যাশ আউট লেনদেনের ক্ষেত্রে এজেন্টরা কমিশন পেয়ে থাকে। বর্তমানে প্রতি হাজার টাকা ক্যাশ আউটের জন্য বিকাশ এজেন্ট প্রায় ১৪.৭০ টাকা কমিশন পান। এর মধ্যে গ্রাহকের কাছ থেকে নির্ধারিত চার্জ কেটে নেওয়া হয় এবং তার একটি নির্দিষ্ট অংশ এজেন্টের কমিশন হিসেবে জমা হয়।
এছাড়া ক্যাশ ইন বা অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত গ্রাহকদের কাছ থেকে আলাদা কোনো চার্জ নেওয়া হয় না, তবে কিছু বিশেষ ক্যাম্পেইন বা কর্পোরেট ক্যাশ ইন ট্রানজেকশনের জন্য বিকাশ এজেন্ট কমিশন পেতে পারে। কমিশনের হার সময় সময় পরিবর্তন হতে পারে এবং বিশেষ কিছু অফার বা প্রচারণার সময় বিকাশ কর্তৃপক্ষ এজেন্টদের জন্য অতিরিক্ত কমিশনের সুযোগ দেয়।
তাই বিকাশের অফিশিয়াল নোটিশ এবং আপডেট নিয়মিত ফলো করা উচিত। সঠিকভাবে লেনদেন পরিচালনা করে এবং বেশি গ্রাহক সেবা দিয়ে প্রতিদিন ভালো পরিমাণ কমিশন আয় করা সম্ভব। বিকাশ এজেন্টের আয় মূলত তাদের দৈনিক লেনদেনের পরিমাণের উপর নির্ভর করে, তাই ভালো লোকেশনে ব্যবসা স্থাপন এবং মানসম্মত সেবা দেওয়া আয় বাড়ানোর অন্যতম চাবিকাঠি।
বিকাশ এজেন্ট লিমিট
বিকাশ এজেন্ট হিসেবে ব্যবসা পরিচালনায় প্রতিদিনের লেনদেনের জন্য কিছু নির্দিষ্ট সীমা বা লিমিট নির্ধারণ করা আছে, যা বিকাশের নীতিমালার আওতায় পড়ে। সাধারণত একটি বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের দৈনিক ক্যাশ ইন এবং ক্যাশ আউট লেনদেনের একটি সর্বোচ্চ সীমা থাকে। বর্তমানে বিকাশ এজেন্টরা দৈনিক প্রায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশ আউট এবং ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্যাশ ইন করতে পারে, তবে এই সীমা এলাকাভেদে এবং চাহিদার ভিত্তিতে ভিন্ন হতে পারে।
এছাড়া প্রতি মাসে এজেন্টদের মোট ক্যাশ ইন এবং ক্যাশ আউট লিমিটও নির্ধারিত থাকে।যদি কোনো এজেন্ট তার নির্ধারিত দৈনিক বা মাসিক লিমিট অতিক্রম করে, তবে বিকাশ কর্তৃপক্ষ সিস্টেমের মাধ্যমে লেনদেন ব্লক করতে পারে অথবা অতিরিক্ত লেনদেনের জন্য অনুমোদন নিতে হতে পারে। এজন্য ব্যবসার প্রাথমিক পর্যায়ে ফ্লোট প্ল্যান এবং দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ বুঝে কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রয়োজনে এজেন্টরা বিকাশের ডিস্ট্রিবিউটরের সাথে যোগাযোগ করে তাদের একাউন্টের লিমিট বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে পারে। ভালভাবে ব্যবসা পরিচালনা এবং গ্রাহক চাহিদা মেটাতে বিকাশ এজেন্টদের উচিত তাদের দৈনিক এবং মাসিক লেনদেনের হিসাব রাখা এবং যথাসময়ে ফ্লোট রিফিল করা। সঠিক লিমিট ম্যানেজমেন্ট ব্যবসার ধারাবাহিকতা এবং গ্রাহক সন্তুষ্টি নিশ্চিত করতে বড় ভূমিকা রাখে।
বঙ্গ টিপস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url