প্রচণ্ড চুলকানির সহজ সমাধান | নিম পাতার ব্যবহারই যথেষ্ট

                             

প্রচন্ড চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে অনেকেই বিস্তারিতভাবে জানেন না। ত্বকে চুলকানি হলে অস্বস্তি আর বিরক্তি যেন পিছু ছাড়ে না। অনেক সময় বাজারের দামী ওষুধেও আরাম পাওয়া যায় না, তখন প্রাকৃতিক উপায়ই হয়ে ওঠে ভরসা। নিম পাতা এমনই এক প্রাকৃতিক উপাদান যা শত বছর ধরে চুলকানি ও ত্বকের নানা সমস্যায় ব্যবহার হয়ে আসছে। 

চুলকানিতে-নিম-পাতার-ব্যবহার

এতে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণ যা ত্বকের চুলকানি ও খোসপচড়ার যন্ত্রণা থেকে দ্রুত মুক্তি দিতে সাহায্য করে। আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদেরকে জানবো কীভাবে নিম পাতা ব্যবহার করলে সহজেই চুলকানি থেকে মিলবে আরাম ও সুরক্ষা।

পেজ সূচিপত্রঃ চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার খুবই কার্যকরী। চুলকানির সমস্যায় নিম পাতা এক অসাধারণ প্রাকৃতিক প্রতিকার। যা সহজলভ্য এবং সাইড ইফেক্ট মুক্ত। চুলকানি যদি ঘনঘন হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে প্রাকৃতিক ও কার্যকর কোনো সমাধান খুব জরুরি হয়ে পড়ে। এ ক্ষেত্রে নিম পাতা ব্যবহার করা যায় কয়েকভাবে। প্রথমেই কিছু তাজা নিম পাতা নিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে যেন ধুলাবালি ও পোকামাকড় না থাকে। এরপর দুই থেকে তিন কাপ পানিতে সেগুলো ১০–১৫ মিনিট ধরে ফুটিয়ে নিতে হবে। ফুটানোর সময় পাতার গাঢ় সবুজ রঙ পানি নিতে শুরু করলে বুঝতে হবে এটি প্রস্তুত। 

এরপর পানি ঠান্ডা করে একটি বোতলে সংরক্ষণ করা যায় এবং প্রতিদিন গোসলের সময় ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে যেসব জায়গায় চুলকানি বেশি সেসব জায়গায় আলাদাভাবে এই পানি দিয়ে ধুয়ে দিলে আরাম পাওয়া যায়। চাইলে নিম পাতার পেস্টও তৈরি করা যায়। সেজন্য ধোয়া পাতা ব্লেন্ডারে বা শিলপাটায় বেটে পেস্ট করে আক্রান্ত জায়গায় সরাসরি লাগিয়ে ১৫–২০ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটা দিনে ১–২ বার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। 

অনেকে আবার নারকেল তেলের সঙ্গে নিম পাতা পেস্ট মিশিয়ে ম্যাসাজ করেও ব্যবহার করেন। যা ত্বকে আরাম আনে এবং র‍্যাশ বা ফুসকুড়ির ঝুঁকি কমায়। এই নিয়মগুলো নিয়মিত অনুসরণ করলে চুলকানির সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে এবং ত্বক হয় পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত। তবে যাদের অ্যালার্জি আছে তারা প্রথমে হাতে বা ছোট জায়গায় ব্যবহার করে পরীক্ষা করে নিতে পারেন। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এই পদ্ধতি চুলকানির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে একদম নিরাপদ ও কার্যকর সমাধান।

চুলকানিতে নিম পাতার উপকারিতা

চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার এ উপকারিতা অনেক। নিম পাতা চুলকানির জন্য এক পরীক্ষিত ও বিশ্বস্ত প্রাকৃতিক উপাদান। এতে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। যা ত্বকের ওপরের জীবাণু দূর করে এবং চুলকানির মূল কারণগুলোকে দমন করে। অনেক সময় ত্বকে ধুলাবালি, ঘাম বা ছত্রাকের কারণে চুলকানি হয়, আর এই সমস্যায় নিম পাতা অসাধারণ কাজ করে। এটি ত্বকে ঠান্ডা ভাব এনে দেয়, লালচে ভাব ও ফোলাভাব কমায় এবং ঘা বা ফুসকুড়ি হলে তা শুকাতে সাহায্য করে। 


সবচেয়ে বড় বিষয় হলো নিম পাতা প্রাকৃতিক হওয়ায় এতে কোনো রাসায়নিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। সুতরাং নিয়মিত ব্যবহার করলেও ত্বকের ক্ষতি হয় না। এছাড়া নিম পাতা ত্বকের পিএইচ ব্যালান্স ঠিক রাখে, যা চুলকানির পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সাহায্য করে। তাই যারা দীর্ঘদিন ধরে চুলকানির সমস্যায় ভুগছেন বা বাজারের কেমিক্যাল-ভিত্তিক ওষুধে কাজ হচ্ছে না তারা নিশ্চিন্তে নিম পাতা ব্যবহার শুরু করতে পারেন। এটি যেমন সহজলভ্য তেমনি কার্যকারিতার দিক থেকেও প্রাকৃতিক চিকিৎসার দারুণ এক উদাহরণ।

    নিম পাতা কি তা সম্পর্কে জানুন

    নিম পাতা হচ্ছে একটি প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদান, যা আমাদের দেশের গ্রামবাংলায় খুব পরিচিত একটি গাছের পাতা। এই গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Azadirachta indica। কিন্তু আমরা একে সহজভাবে নিম গাছ নামেই চিনি। এর পাতাগুলো দেখতে সবুজ, লম্বাটে ও খাঁজকাটা ধরনের হয়। নিম পাতা বহু শতাব্দী ধরে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে, বিশেষ করে ত্বকের নানা রোগ, চুলকানি, ফুসকুড়ি, চুলের খুশকি ও ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণে। এতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান। 

    যা শরীরকে ভেতর ও বাইরে থেকে জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে। নিম পাতার সবচেয়ে বড় গুণ হলো এটি একদম প্রাকৃতিক ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন, ফলে যেকোনো বয়সের মানুষ এটি ব্যবহার করতে পারেন। প্রাচীনকাল থেকেই নিম পাতা ঘরোয়া ওষুধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে, আর আধুনিক বিজ্ঞানও এর উপকারিতা স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে নিম পাতা এখনো সমান জনপ্রিয় ও উপকারী একটি ভেষজ চিকিৎসা উপাদান হিসেবে বিবেচিত।

    ত্বকের চুলকানির জন্য নিম পাতার ব্যবহার

    ত্বকের চুলকানি এক বিরক্তিকর ও অস্বস্তিকর সমস্যা যা অনেক সময় জীবাণু, ঘাম, অ্যালার্জি বা ছত্রাকজনিত কারণে হয়ে থাকে। এই ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিম পাতা একটি প্রাকৃতিক, নিরাপদ ও সহজলভ্য সমাধান হিসেবে দারুণ কার্যকর। নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান, যা ত্বকে জমে থাকা জীবাণু ধ্বংস করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ব্যবহারের জন্য প্রথমে কিছু তাজা নিম পাতা নিয়ে পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। 

    এরপর সেগুলো ফুটিয়ে একটি ঘন সবুজ রঙের পানি তৈরি করুন। এই পানি ঠান্ডা করে দিনে ১-২ বার আক্রান্ত জায়গায় লাগাতে পারেন বা গোসলের সময় ব্যবহার করতে পারেন। চাইলে নিম পাতা বেটে পেস্ট তৈরি করে সরাসরি চুলকানির জায়গায় লাগিয়েও ব্যবহার করা যায়। নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি চুলকানির উপশম দেয়, লালচে ভাব ও ফুসকুড়ি কমায় এবং ত্বকে ঠান্ডা ও আরামদায়ক অনুভূতি এনে দেয়। কোনো কেমিক্যাল ছাড়াই এই প্রাকৃতিক চিকিৎসা ত্বকের জন্য একেবারেই নিরাপদ এবং দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর।

    নিমপাতা কি এলার্জির কাজ করে

    নিম পাতা সাধারণত একটি প্রাকৃতিক ও নিরাপদ উপাদান হিসেবে পরিচিত। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। যদিও বেশিরভাগ মানুষ নিম পাতা ব্যবহার করলে উপকারই পেয়ে থাকেন, তবুও যাদের সংবেদনশীল ত্বক আছে বা হাইপারসেন্সিটিভ স্কিন রিঅ্যাকশন হয়ে থাকে তাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক মানুষ নিম পাতার প্রতি অ্যালার্জিক হতে পারেন। এলার্জির লক্ষণ হিসেবে ত্বকে র‍্যাশ, লালচে ভাব, চুলকানি বা হালকা জ্বালাভাব দেখা দিতে পারে। 

    তাই প্রথমবার ব্যবহার করার আগে একটুখানি নিম পাতা পেস্ট হাতে বা কানে লাগিয়ে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায় শরীরের প্রতিক্রিয়া কেমন। যদি কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা না যায় তাহলে স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করা নিরাপদ। তবে যাদের স্কিন অ্যালার্জির পূর্বের ইতিহাস আছে বা ত্বকে সহজে র‍্যাশ হয়, তাদের উচিত ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর ব্যবহার শুরু করা। সবশেষে বলতেই হয় নিম পাতা যতটা উপকারী, সচেতনভাবে ব্যবহার করলে ততটাই নিরাপদ।

    নিম পাতা কিভাবে খেলে তা উপকারী

    নিম পাতা শুধু ত্বকে লাগানোর জন্য নয়, খাওয়ার মাধ্যমেও শরীরের ভেতরকার নানা সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কয়েকটি তাজা নিম পাতা চিবিয়ে খেলে শরীরের রক্ত পরিশোধন হয়, যেটি ব্রণ, ফুসকুড়ি বা বিভিন্ন চর্মরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এছাড়া নিম পাতা খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং দেহে থাকা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবী ধ্বংস হয়। কেউ চাইলে নিম পাতার রসও খেতে পারেন। এর জন্য কয়েকটি পাতা ব্লেন্ড করে পানি মিশিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রতিদিন সকালে ১–২ চামচ করে খাওয়া যায়। 


    এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, হজমের সমস্যা দূর এবং লিভার পরিষ্কার করতেও দারুণ কার্যকর। তবে নিম পাতা অনেকের কাছে একটু তিতা লাগতে পারে, তাই প্রথমে অল্প পরিমাণে শুরু করা ভালো। গর্ভবতী নারী বা যাদের পেট সংবেদনশীল তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন। সবশেষে বলা যায়, নিয়মিত ও পরিমিতভাবে নিম পাতা খেলে শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার থাকে এবং নানা রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়, একেবারে প্রাকৃতিক ও কার্যকর উপায়ে।

    নিম পাতার অপকারিতা কি কি

    নিম পাতা অনেক উপকারী হলেও অতিরিক্ত বা ভুলভাবে ব্যবহার করলে কিছু অপকারিতাও হতে পারে, যা আমাদের জানা জরুরি। নিম পাতা খুব বেশি পরিমাণে খেলে পেটের সমস্যা, যেমনঃ ডায়রিয়া, বমিভাব বা অ্যাসিডিটির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের হজমশক্তি দুর্বল বা পেট সংবেদনশীল তাদের জন্য নিম পাতার রস বেশি তিতা হওয়ায় অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। এছাড়া গর্ভবতী নারীদের জন্য নিম পাতা খাওয়াটা একেবারেই নিরুৎসাহিত করা হয়, কারণ এটি গর্ভে অনাকাঙ্ক্ষিত সংকোচন ঘটাতে পারে, ফলে বাচ্চা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

    শিশুদের ক্ষেত্রেও সরাসরি নিম পাতার রস খাওয়ানো ঠিক নয়, কারণ তাদের শরীর এত তিতা বা তীব্র উপাদান সহ্য করতে পারে না। কারও কারও ত্বকে নিম পাতা ব্যবহারের ফলে অ্যালার্জির মতো প্রতিক্রিয়া হতে পারে। যেমনঃ চুলকানি, র‍্যাশ বা লালচে ভাব। তাই প্রথমবার ব্যবহার করার আগে শরীরের ছোট একটি অংশে টেস্ট করে নেওয়া ভালো। সবশেষে বলা যায় নিম পাতা যতই প্রাকৃতিক হোক তা সঠিক নিয়মে ও পরিমিতভাবে ব্যবহার না করলে শরীরের ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই উপকারের পাশাপাশি সতর্ক থাকাটাও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

    ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে নিম পাতার ব্যবহার

    ত্বকের প্রাকৃতিক যত্নে নিম পাতা এমন এক উপাদান যার গুণাগুণ যুগের পর যুগ ধরে মানুষ বিশ্বাস করে আসছে। নিয়মিত নিম পাতা ব্যবহারে ত্বকের ভেতরের দূষিত উপাদানগুলো পরিষ্কার হয়ে যায়। যার ফলে মুখে ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস বা র‍্যাশ হওয়ার প্রবণতা কমে যায়। অনেকেই জানেন না নিম পাতা শুধু ত্বককে জীবাণুমুক্তই করে না এটি ত্বকের রঙ স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে। যাদের ত্বকে দাগ বা দাগের চিহ্ন রয়েছে, তারা নিম পাতা বেটে তার পেস্ট মুখে লাগালে ধীরে ধীরে দাগ হালকা হয়ে আসে এবং ত্বকে একটা প্রাকৃতিক উজ্জ্বল ভাব ফিরে আসে। 

    বিশেষ করে গরমের সময় মুখে অতিরিক্ত তেল ওঠা বা ঘামের কারণে যাদের স্কিন অ্যালার্জি হয় তারা নিম পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে মুখ ধুলে তাৎক্ষণিক আরাম পাওয়া যায়। সবচেয়ে বড় কথা, নিম পাতা হলো এমন একটি ভেষজ উপাদান, যেটি ত্বকে কোনো রকম কেমিক্যাল ছাড়াই সৌন্দর্য বাড়াতে সাহায্য করে, একদম ঘরোয়া ও নিরাপদ উপায়ে। তাই আপনারা নিঃসন্দেহে ত্বকের যত্নে ও চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার করতে পারেন।

    সমসাময়িক প্রশ্ন উত্তর

    প্রশ্নঃ কীভাবে নিম পাতা ব্যবহার করলে চুলকানিতে উপকার পাওয়া যাবে?

    উত্তরঃ তাজা নিম পাতা ফুটিয়ে সেই পানি ঠান্ডা করে আক্রান্ত স্থানে ধীরে ধীরে লাগাতে হবে। চাইলে গোসলের পানিতেও মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া নিম পাতার পেস্ট করে সরাসরি লাগানোও খুব উপকারী।

    প্রশ্নঃ  দিনে কয়বার নিম পাতা ব্যবহার করা উচিত?

    উত্তরঃ সাধারণত দিনে ১ থেকে ২ বার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে কারও ত্বক অতিরিক্ত সংবেদনশীল হলে প্রথমে দিনে একবার ব্যবহার করে প্রতিক্রিয়া দেখে নেওয়া ভালো।

    প্রশ্নঃ নিম পাতা কি সব ধরণের ত্বকের জন্য নিরাপদ?

    উত্তরঃ হ্যাঁ, নিম পাতা প্রাকৃতিক হওয়ায় প্রায় সব ধরনের ত্বকে এটি ব্যবহার করা নিরাপদ। তবে যাদের অ্যালার্জি বা খুব সেনসিটিভ স্কিন রয়েছে তারা আগে ছোট একটি জায়গায় টেস্ট করে তারপর নিয়মিত ব্যবহার শুরু করুন।

    প্রশ্নঃ নিম পাতার সেদ্ধ পানি কতদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়?

    উত্তরঃ নিম পাতার পানি ঠান্ডা করে ফ্রিজে রাখলে ২–৩ দিন পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য থাকে। তবে প্রতিদিন ফ্রেশ তৈরি করা হলে সবচেয়ে ভালো ফল পাওয়া যায়।

    প্রশ্নঃ চুলকানির জন্য বাজারের ওষুধ ভালো না নিম পাতা?

    উত্তরঃ বাজারের ওষুধে কেমিক্যাল থাকে, যা ত্বকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু নিম পাতা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। তাই যারা ঘরোয়া ও নিরাপদ উপায় খুঁজছেন তাদের জন্য নিম পাতা ভালো বিকল্প।

    প্রশ্নঃ গরমকালে চুলকানির সমস্যা হলে নিম পাতা কি সাহায্য করে?

    উত্তরঃ অবশ্যই। গরমকালে ঘাম ও ধুলাবালির কারণে চুলকানি বাড়ে। নিম পাতার ঠান্ডা ও জীবাণুনাশক গুণ চুলকানি থেকে তাৎক্ষণিক আরাম দেয় এবং ত্বক সতেজ রাখে।

    প্রশ্নঃ শিশুর ত্বকের চুলকানিতে কি নিম পাতা ব্যবহার করা যায়?

    উত্তরঃ হ্যাঁ, তবে খুব অল্প পরিমাণে এবং হালকা করে ব্যবহার করা উচিত। শিশুর সংবেদনশীল ত্বকে সরাসরি নিম পাতা লাগানোর আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।

    প্রশ্নঃ নিম পাতার পেস্ট কতক্ষণ ত্বকে রাখতে হয়?

    উত্তরঃ নিম পাতার পেস্ট ত্বকে ১৫–২০ মিনিটের মতো রেখে দিতে হয়। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে চুলকানির তীব্রতা অনুযায়ী সময় সামান্য কম-বেশি করা যেতে পারে।

    প্রশ্নঃ চুলকানিতে নিম পাতা ব্যবহারে কতদিনে ফল পাওয়া যায়?

    উত্তরঃ অনেক সময় ২–৩ দিনের মধ্যেই আরাম পাওয়া যায়, আবার কারও ক্ষেত্রে ৭–১০ দিন লাগতে পারে। এটি নির্ভর করে চুলকানির ধরণ ও ত্বকের অবস্থার ওপর। নিয়মিত ব্যবহার করলে উপকার নিশ্চিতভাবেই মিলবে।

    প্রশ্নঃ  চুলকানি কমাতে নিম পাতা কতটা কার্যকর?

    উত্তরঃ নিম পাতা চুলকানি কমাতে অত্যন্ত কার্যকর একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান ত্বকের জীবাণু দূর করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, ফলে চুলকানি ধীরে ধীরে কমে যায়।

    লেখকের মন্তব্যঃ চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার

    চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি আর্টিকেলটি পরে আপনারা উপকৃত হয়েছেন। চুলকানি আমাদের জীবনের একটি বিরক্তিকর সমস্যা যা কখনও হঠাৎ করে আবার কখনও দীর্ঘমেয়াদে ভোগাতে পারে। একজন লেখক ও স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ হিসেবে আমি দেখেছি অনেকেই ছোটখাটো চুলকানির জন্যও বারবার কেমিক্যালযুক্ত ওষুধ বা ক্রীম ব্যবহার করেন, যা দীর্ঘমেয়াদে ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। অথচ আমাদের আশেপাশেই রয়েছে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যেগুলোর গুণাগুণ সত্যিই অসাধারণ। 

    নিম পাতা ঠিক তেমনই একটি ভেষজ উপাদান যার ব্যবহার চুলকানি কমাতে বহু প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে। এটি ত্বকের জীবাণু ধ্বংস করে, প্রদাহ কমায় এবং ত্বককে আরাম দেয় একেবারেই নিরাপদভাবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি প্রাকৃতিক উপায়ে যতটা সম্ভব শরীরকে সুস্থ রাখা উচিত, আর নিম পাতা সেই পথেই এক অনন্য সহযাত্রী। তবে কারো যদি অতিসংবেদনশীল ত্বক থাকে তাহলে শুরুতে সতর্কভাবে ব্যবহার করা উচিত। সঠিকভাবে ও নিয়মিত ব্যবহারে নিম পাতা চুলকানির জন্য হতে পারে এক কার্যকর ও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান।

    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    বঙ্গ টিপস আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url